• মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪২৯

সারা দেশ

সুন্নতে খাৎনা করতে গিয়ে শিশুর পুরষাঙ্গ পুড়িয়ে ফেললো ডিএমএফ চিকিৎসক

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২৩ জুলাই ২০২৩

রহমত উল্যাহ পাটোয়ারী, রামগঞ্জ(লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি: 
রামগঞ্জে সুন্নতে খাতনা করতে গিয়ে মাহাদী (৩) নামের এক শিশুর পুরুষাঙ্গ পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে সরোয়ার হোসেন নামের একজন ডিএমএফ ডিগ্রিধারী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকে ঢাকার মিডফোর্ড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে শিশুটি। গত ৩১ মে দুপুরে পৌর শহরের শিশু পার্ক সংলগ্ন রামগঞ্জ ইসলামিয়া হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ও ভূল চিকিৎসায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে দাবী ভুক্তভোগী শিশুর পরিবারের।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুটির দাদা আনোয়ার হোসেন বাদী হয়ে রামগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলা ব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
রবিবার দুপুরে সরেজমিনে রামগঞ্জ ইসলামিয়া হাসপাতালে গেলে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক রবিউল আলম রিয়াজ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন।
জানা গেছে, উপজেলার ভোলাকোট ইউনিয়নের শাকতলা মিয়া রাজা পাটওয়ারী বাড়ীর নজরুল ইসলাম মামুনের ছেলে মাহাদী (৩) কে সুন্নতে খাৎনা করানোর জন্য স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আবদুর রহিমের পরামর্শে ঘটনার দিন (৩১ মে) সকাল ১১ টার দিকে রামগঞ্জ ইসলামীয়া হাসপাতালে নিয়ে আসে শিশুটির পরিবার।
এ সময় হাসপাতালের ডিএমএফ ডিগ্রীধারী ডাঃ সরোয়ার হোসেন সুন্নতে খৎনা করানোর সময় ব্যবহৃত মেশিনের (লেজার মেশিন) অতিরিক্ত তাপে পুড়ে যায় শিশুটির পুরুষাঙ্গ।
ঘটনাটি বুঝতে পেরে হসপিটাল কর্তৃপক্ষ শিশু মাহাদিকে নোয়াখালীর মাইজদীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে রেফার করে।
সেখানে শিশু মাহাদির শারিরীক অবস্থার আরো অবনতি হলে কর্তব্যরত ডাক্তারের পরামর্শে ঢাকার মিডফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে শিশুটি মিডফোর্ড হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
ভুক্তভোগী শিশুটির দাদা আনোয়ার হোসেন বলেন, স্থানীয় শাকতলা বাজারের ফার্মেসী ব্যবসায়ী ডাঃ আবদুর রহিমের পরামর্শে আমার নাতিকে সুন্নতে খৎনা করানোর জন্য রামগঞ্জ ইসলামিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে ডাঃ সরোয়ার হোসেনের ভুল চিকিৎসায় আমার নাতির পুরুষাঙ্গ পুড়ে সারাজীবনের জন্য পঙ্গু করে দিয়েছে তারা। মিডফোর্ড হাসপাতালের চিকিৎসক জানিয়েছেন, দেড় বছর ধরে পর্যাক্রমে সার্জারি করতে হবে। তার পরও পুরো পুষাঙ্গ রক্ষা করা কঠিন হবে। তাই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ডাঃ সরোয়ারের বিচারের দাবী করে রামগঞ্জ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।
পল্লী চিকিৎসক ডাঃ আবদুর রহিম বলেন, সুন্নতে খৎনা করানোর জন্য আমার কাছে আসে শিশুটির পরিবার। পরে আমি হাসপাতালের মার্কেটিং অফিসারের সাথে কথা বলে তাদেরকে রামগঞ্জ ইসলামিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাই। কিন্তু সুন্নতে খৎনা করার সময় মেশিনের অতিরিক্ত গরমে শিশুটির পুরুষাঙ্গ পুড়ে গেছে। রামগঞ্জ ইসলামিয়া হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল্লাহ মানিক ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ঘটনার পর থেকেই ডাঃ সরোয়ার রোগীর স্বজনদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে। আগামী সপ্তাহে তাদের সাথে বসে বিষয়টি সমাধান করা হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ডাঃ সরোয়ার হোসেন অসুস্থতার দোহাই দিয়ে কল কেটে দেয়। পরে একাধিক বার ফোন করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।
রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদুল হক বলেন, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি। তবে ভুক্তভোগীরা মামলা করতে রাজি নাই। মামলা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ গুনময় পোদ্দার বলেন, প্রশিক্ষণ থাকলে ডিএমএফ ডিগ্রিধারী ডাক্তারগণ সুন্নতে খৎনা করতে পারবেন। ডাঃ সরোয়ারের প্রশিক্ষণ আছে কিনা আমার জানা নেই। এসময় তিনি আরো বলেন, গত কয়েকদিন আগেও এ হাসপাতালের কোন কাগজপত্র না থাকায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার সাইফুল আমিন ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা করে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads